যে কোন দূর্ঘটনা সর্বদা হঠাৎ করেই ঘটে এবং প্রাথমিক চিকিৎসার দ্বারা তার ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করা যায়। তবে সকল প্রকার দূর্ঘটনার মধ্যে চোখের আঘাতজনিত দূর্ঘটনা বেশি মারাত্মক হতে পারে। কারণ চোখ কোমল এবং সংবেদনশীল।
যদি সঠিকভাবে আঘাতের পর করণীয় কাজ না করা যায় তবে সামান্য আঘাতেই দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন! রক্ষণমূলক সতর্কতা ঐ সকল লোকের জন্য বেশি জরুরি যারা ওয়েল্ডিং এবং গ্রাইন্ডিং মেশিনে কাজ করেন। তাদের চোখে চশমা পড়া উচিৎ।
চোখে আমরা বিভিন্ন ধরনের আঘাতের শিকার হতে পারি। জানব সে সব আঘাত পেলে প্রকাশিত লক্ষণ, কারণ ও প্রাথমিকভাবে করণীয়।
আঘাতের লক্ষণ: সাধারণত চোখে আঘাত লাগলে প্রকাশিত লক্ষণগুলো হচ্ছে:
- ব্যথা।
- দৃষ্টিশক্তি হ্রাস।
- চোখ দিয়ে পানি পড়া।
- চোখ খুলতে কষ্ট পাওয়া বা খুলতে না পারা।
আঘাতের ফলে লক্ষণগুলো জানা হল। চলুন জানি আঘাত কিভাবে পেতে পারেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে করণীয় কাজগুলো:
বাইরের বস্তু দ্বারা আঘাত: অনেক সময় বাইরের কোন বস্তু চোখে ঢুকে যেতে পারে। ছোট কাঁচের টুকরা বা ধাতব টুকরা চোখে প্রবেশ করার সম্ভাবণা বেশি থাকে।
করণীয়: চোখে বাইরে থেকে শক্ত বস্তু প্রবেশ করলে নিম্নোক্ত কাজগুলো সাবধানে করবেন:
- চোখ ঘষা যাবে না।
- বাইরের বস্তুটি চোখের সাদা অংশে দেখা যায় কিনা নিশ্চিত হোন। সাদা অংশে থাকলে চোখের পাতা নিচের দিকে নামিয়ে পর্যায়ক্রমিকভাবে চোখ পিটপিট করান।
- পরিষ্কার শীতল পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন।
- কখনই সন্না, নখ অথবা আঙ্গুল দিয়ে তোলার চেষ্টা করবেন না।
- এসবে কাজ না হয় তবে চোখে হালকা ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান।
- যদি বস্তুটি কর্ণিয়ার উপর থাকে তবে তা সরানোর চেষ্টা করবেন না। দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেন।
রাসায়নিক দ্বারা আঘাত: চোখে অনেক সময় তরল রাসায়নিক পদার্থ যেতে পারে। সবথেকে বেশি সম্ভাবণা থাকে এসিড প্রবেশের।
করণীয়:
- শান্ত হয়ে থাকবেন এবং চোখ বন্ধ করবেন না। চোখ বন্ধ করলে রাসায়িক পদার্থ চোখের ভিতর আটকা পড়ে ক্ষতির পরিমাণ বাড়াতে পারে।
- তাৎক্ষণিকভাবে ১৫-৩০ মিনিট চোখে পানি ঢালুন। চোখে কোন ব্যান্ডেজ ব্যবহার করবেন না।
চোখে সরাসরি আঘাত: শিশুদের ক্ষেত্রে এটি একটি সাধারণ ঘটনা যখন তারা বল খেলতে যায়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে দূর্ঘটনাবশত আঘাত লাগতে পারে।
করণীয়:
- চোখে হালকা ভাবে ঠাণ্ডা চাপ দিন।
- চোখে সরাসরি বরফ ব্যবহার করা যাবে না। প্রথমে বরফ টুকরা কাপড়ে পেঁচিয়ে নিবেন।
- পরদিন হালকা উষ্ণতার চাপ দিবেন। এতে থেতলানো অংশ দূর হবে।
- যদি চোখ খুলতে না পারেন, ঝাপসা দেখেন অথবা চোখে ব্যথা করতে থাকে তবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন।
চোখের যেকোন সমস্যায় ডাক্তারের কাছে যান। এই লেখা ডাক্তারের বিকল্প নয়। শুধুমাত্র প্রাথমিকভাবে কিছু করণীয় কাজ যা বিপদের মাত্রা কমাতে পারে তাই বলার জন্য লেখা। কারণ আঘাতে করণীয় কি তা যথাযথভাবে করতে না পারলে হিতে-রিপরীত হতে পারে!